সোমবার, ১৪ Jul ২০২৫, ১১:২৯ অপরাহ্ন
দুর্নীতির মামলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছর করে সশ্রম করাদ- দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি সাবেক মেয়রসহ দুই আসামিকে এক কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা অর্থদ- দেয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক মামলা দায়ের করা মামলায় দির্ঘ ২০ বছর পরে গতকাল সোমবার ৫ আসামীর উপস্থিতিতে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন। আসামিরা হলেন- বরিশাল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৃতীয় পরিষদের মেয়র, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক মো. আহসান হাবিব কামাল, পৌর সভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসাহাক, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ও ঢাকা নগর ভবনে কর্মরত স্থানীয় সরকার বিভাগের আরবান পাবলিক এন্ড এনভায়োরেনমেন্ট হেলথ্ সেক্টর ডিপার্টমেন্ট প্রজেক্ট এর তত্ত্বাবধায়ক খান মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, বরিশাল পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল সত্তার ও নগরীর কালিবাড়ি রোডের বাসিন্দা ঠিকাদার মো. জাকির হোসেন।
তথ্য নিশ্চিত করে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশিদ নথির বরাত দিয়ে বলেন, ‘তৎকালিন বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন আহসান হাবিব কামাল। এছাড়া দতিরা একই সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঠিকাদার ছিলেন। তারা ১৯৯৫ সারের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন পর্যন্ত পৌরসভা এলাকায় টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক মেরামত দেখিয়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থার প্যাড প্রস্তুত পূর্বক ভুয়া দরপত্র সৃষ্টি করে। পরে ভুয়া ঠিকাদার নিয়োগ করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বরিশাল ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক এর ১১০৪ চলতি হিসাব খুলে টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত চারটি চেকের মাধ্যমে মোট ৩৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে। এর মধ্যে ১১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৭১ টাকার রাস্তা মেরামত কাজ দিয়ে আসামিরা পরস্পর একে অপরের সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি ২৭ লক্ষ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাত করে। এ অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ও দুদকের প্রধান কার্যালযের বর্তমান উপ-পরিচালক আব্দুল বাছেদ বাদী হয়ে ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর পেনাল কোর্ট ৪৬৭/৪২০/৪০৯/১০৯/ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী প্রায় ১১ বছর পরে ২০১১ সালের ১৯ জুুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত বরিশাল জেলা র্কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুর বাছেদ ও সহকারী পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ আদালতে র্চার্জশীট দাখিল করেন।
মামলায় ২০ জনের সাক্ষগ্রহণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের সকলকে পেনাল কোর্ট ৪০৯ ও ১০৯ ধারার অপরাধে অভিযুক্ত ৫ আসামির প্রত্যেককে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদ দেয় হয়। পাশাপাশি ১ নম্বর আসামি সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও পাঁচ নম্বর আসামি ঠিকাদার মো. জাকির হোসেনকে এক কোটি টাকা করে মোট ২ কোটি টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। রায় ঘোষণার পরে সাবেক সিটি মেয়রসহ পাঁচ আসামিকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।